
চট্টবাংলা ডেস্ক-ঃ
বনরুই। যার ইংরেজি নাম প্যাঙ্গোলিন। স্রষ্টার সমস্ত সৃষ্টিই তাঁর সন্তানের মত। বনরুইও স্রষ্টার সৃষ্ট একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। অত্যন্ত নিরীহ এ প্রাণীর মানুষকে আক্রমণ করার কোন ক্ষমতা নেই। কিন্তু অত্যন্ত নিরীহ এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটিকে যেভাবে নিঃশেষ করেছিল মানুষ, প্রকৃতি তারই প্রতিশোধ নিতে চাইছে করোনা ভাইরাসের মাধ্যমে এমনটি মনে হলে ভুল হবে না।
বনরুই নিজের বাচ্চাদের বহু কষ্টে পরম মমতায় প্রায় দু-বছর ধরে লালন পালন করে তাদের বড় করে তোলে।
চীনের উহানের বন্যপ্রাণীর বাজার থেকে ঘাতক করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর গবেষকদের সন্দেহের শীর্ষে বিলুপ্তপ্রায় বনরুই বা প্যাঙ্গোলিন। পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়া গেলেও গবেষণা যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে কভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে বনরুই’র বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। তাই যদি হয়, তা হলে এটা হবে প্রকৃতির চরম প্রতিশোধ।
বনরুই হল কুমিরের মতো দেখতে, নিতান্ত নিরীহ ছোট্টখাট্টো বিড়ালের মাপের এক প্রাণী। কিছু প্রজাতি অবশ্য বড়সড়ও হয়। শক্ত শক্ত আঁশে ঢাকা শরীর, বিপদে পড়লে যার সাহায্যে আত্মরক্ষা করে সে। দেখে সরীসৃপ মনে হলেও আসলে স্তন্যপায়ী।
একসঙ্গে গোটা তিনেক পর্যন্ত সন্তানের জন্ম দিতে পারে। তারপর পরম মমতায় প্রায় দু-বছর ধরে লালনপালন করে তাদের বড় করে তোলে। এই বনরুই বা প্যাঙ্গোলিনের আদি নিবাস চীন, এছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ভারত, বাংলাদেশ ও আফ্রিকার কিছু বিশেষ অংশের জঙ্গলে এদের দেখা পাওয়া যায়।
এরা বসতি গড়ে তুলে সাধারনত গাছের কোটরে, মাটির নীচে বা ঘাসজমিতে। এরা মূলত লুকিয়ে থেকেই তাদের জীবন কাটিয়ে দিতে ভালবাসে। কারণ সে একা থাকতেই নিজেকে স্বাধীন ভাবে এবং ভালবাসে। প্রজননের সময় ছাড়া কারো সঙ্গে মেলামেশা করে না।
রাতই হল তাদের খাবার সংগ্রহ করার উপযুক্ত সময়। রাতভর ঘুরে ঘুরে এরা খাবার জোগাড় করে। খাবার সংগ্রহ করতে তাদের লম্বা আঠালো জিভটা এরা মেলে দেয়। তাতে পিঁপড়ে, উইপোকা, লার্ভা, পোকামাকড় যা এসে লাগে তাতেই পেট ভরায়।
এইতো হল বনরুই। আসুন আমরা প্রকৃতিকে যথা সাধ্য তার মতো থাকতে দেই। সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর প্রয়োজনেই প্রতিটি জীব বৈচিত্র্য তৈরি করেছেন। প্রকৃতির প্রতিশোধ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে হলে নিজেদের সচেতন হতে হবে। সচেতনতার মন্ত্রে দীক্ষিত করাতে হবে আগামী প্রজন্মকে।
তথ্যসূত্র ও ছবি কৃতজ্ঞতায়- আনন্দবাজার।
