আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নির্বাচিত কৃষ্ণাঙ্গ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দেশটির প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় বিশ্বব্যাপী প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন কমলা হ্যারিস। এই বিজয়ে গর্বিত কমলার স্বামী ডগ এমহোফ বিজয়ের আনন্দে স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে একটি ছবি পোস্ট করেছেন টুইটারে।
তাতে মাত্র একটি লাইন লিখেছেন,‘সো প্রাউড অব ইউ’ অর্থাৎ আমি তোমাকে নিয়ে গর্বিত।
কমলার বাবা ডোনাল্ড হ্যারিস একজন জ্যামাইকান আর মা ক্যান্সার গবেষক শ্যামলা গোপালান যিনি ভারতীয় এক কূটনীতিকের মেয়ে। কমলা হ্যারিস এই দম্পতির প্রথম সন্তান। ১৯৬৪ সালের ২০ অক্টোবর ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডে জন্ম তার। কমলার নামের শেষাংশ বাবার কাছ থেকে নেওয়া আর প্রথম অংশ মায়ের দেওয়া। ৭ বছর বয়সে হ্যারিসের বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। এরপর দুই মেয়েকে নিয়ে শ্যামলার সংগ্রামী জীবন শুরু হয় বার্কলের একটি হলুদ ডুপ্লেক্স ভবনের উপরের তলায়। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি পড়ার পর কমলা হেস্টিং কলেজ থেকে আইনে ডিগ্রি নেন।
১৯৯০ সালে তিনি ওকল্যান্ডে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর ২০০৩ সালে সান ফ্রান্সিসকোর অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে পুন:নির্বাচিত হন তিনি।
তিনি একজন মার্কিন রাজনীতিবিদ এবং আইনজীবী। এ ছাড়াও তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির একজন সদস্য। রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী জো বাইডেনের সাথে ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উপরাষ্ট্রপতি মাইক পেন্সকে হারিয়েছেন কমলা। ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহন করবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কনিষ্ঠ সিনেটর হিসাবে ২০১৭ সাল থেকে ক্যালিফোর্নিয়ায় দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনীত উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী।
কমলা হ্যারিস হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, হেস্টিংস কলেজ অফ ল হতে স্নাতক উপাধির অধিকারী।আল্যামেডা কাউন্টি জেলা অ্যাটর্নি অফিসে তার কর্মজীবন শুরু করেন তিনি।
১৯৯০ সালে তিনি ওকল্যান্ডে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর ২০০৩ সালে সান ফ্রান্সিসকোর অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে পুন:নির্বাচিত হন তিনি।
২০১৬ সালের সিনেট নির্বাচনে লোরেটা সানচেজকে পরাজিত করে বারবারা বক্সারের উত্তরসূরী হন তিনি। এর ফলে ক্যালিফোর্নিয়ার তৃতীয় মহিলা সেনেটর হওয়ার পাশাপাশি দ্বিতীয় আফ্রিকান-মার্কিন মহিলা এবং প্রথম দক্ষিণ-এশীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনী হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার উচ্চকক্ষ সিনেটে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেনেটর হিসাবে তিনি স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার, নিয়ন্ত্রিত পদার্থের তফসিল হতে গাঁজা বাতিলকরণ, অনিবন্ধিত অভিবাসীদের নাগরিকত্বের পথ হিসাবে ড্রিম আইন, আগ্নেয়াস্ত্র নিষিদ্ধকরণ এবং প্রগতিশীল কর সংস্কারকে সমর্থন করেছেন। সিনেটের শুনানির সময় ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি তার তীক্ষ্ণ প্রশ্নের জন্য তিনি একটি জাতীয় পরিচিতি অর্জন করেন।
কমলা হ্যারিস ২০২০ সালের ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য অংশ নিয়েছিলেন এবং ৩রা ডিসেম্বর, ২০১৯ এ তার প্রচার শেষ হওয়ার আগে জাতীয় মনোযোগ আকর্ষণ করেছিলেন।
১১ই আগস্টে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য সাবেক উপরাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের সহকর্মী হিসাবে ঘোষিত হন। ফলে তিনি প্রথম আফ্রিকান-মার্কিনী এবং প্রথম এশীয়-মার্কিনী হিসাবে কোনও বড় রাজনৈতিক দলের রাষ্ট্রপতি প্রার্থীর চলতি সহকর্মী হিসাবে ঘোষিত হন এবং একই সাথে তিনি জেরাল্ডিন ফেরারো ও সারা পেলিনের পরে বড় কোন দল থেকে তৃতীয় নারী হিসেবে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পান।