অনিন্দ্য নয়ন: চট্টগ্রাম নগরীর লালখানবাজার মতিঝর্ণা এলাকায় ভাড়া বাসায় ছিলো কুমিল্লার মেয়ে স্বপ্না (ছদ্মনাম)। মাসখানেক আগে গ্রামে চলে যান তারা। কিন্তু গ্রামে গিয়ে স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হলে স্বপ্না চলে যান বাপের বাড়ি। অভিমানে স্বামীর সাথেও যোগাযোগ বন্ধ রাখেন।
কিন্তু স্বামীর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় মতিঝর্ণা এলাকার পরিচিতজনদের সাথে যোগাযোগের করেন স্বপ্না।যোগাযোগের ফলে আগের বাসার প্রতিবেশী মনির হোসেনের পাতা ফাঁদে পড়েন স্বপ্না।
শুক্রবার ৬ নভেম্বর বিকেলে স্বামীর সন্ধানে মতিঝর্ণা এলাকায় আসেন স্বপ্না। পূর্বপরিচিত হওয়ায় তাকে রাতে থাকার আশ্রয় দেন মনিরের স্ত্রীও। মনিরের স্ত্রীর সাথে রাত কাটানোর পর সকালে স্বপ্নাকে বাসায় রেখে গার্মেন্টসে চলে যান মনিরের স্ত্রী।
স্ত্রী গার্মেন্টসে চলে গেলে স্বপ্নাকে বাসায় একা পেয়ে কুপ্রস্তাব দেয় মনির। মনিরের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পরবর্তীতে গলায় ছুরি ঠেকিয়ে স্বপ্নাকে ধর্ষণ করে মনির। পরবর্তীতে মনিরের বাসা থেকে বেরিয়ে দুপুর পর্যন্ত পূর্বের পরিচিত সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে স্বামীকে খুঁজেতে থাকেন স্বপ্না। স্বামীকে না পেয়ে দুপুরে মনিরের বাসায় আসেন ফেলে যাওয়া বোরকা নিতে।
এসময় মনিরের সহযোগী মুন্না, এমরান, দিদার, সোহেল, মাসুদ, রাজু, জাকির তাকে মারধর করে এবং সঙ্গে থাকা ২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় বখাটে রাজু।
নির্যাতনের শিকার স্বপ্নার অভিযোগ পেয়ে খুলশী থানা পুলিশ মূল আসামি মনির হোসেনকে একটি ধারালো ছুরিসহ আটক করেন।
এসময় মনিরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তার তিন সহযোগীকেও আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, ধর্ষণের শিকার নারী পরে ধর্ষকের সহযোগীদের হাতে মারধরের শিকার এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা মূল অভিযুক্ত মনির হোসেন সহ মোট চারজনকে আটক করেছি। তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী-২০০৩)-এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এছাড়াও ধারালো ছুরি রাখার দায়ে মনিরের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনেও মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিএমপির উপকমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বলেন, ওই নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত মনির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া ওই নারীকে হেনস্থা করা ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।