নিজস্ব প্রতিবেদক। চট্টবাংলা ডট কমঃ আজ বীর চট্টলার মাটি ও মানুষের অবিসংবাদিত নেতা চট্টলবীর আলহাজ্ব এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ৭৬ তম জন্মদিন।
১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরার সম্ভ্রান্ত চৌধুরী পরিবারে জন্ম নেন এই নেতা।
রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর দূরদর্শী চেতনাসম্পন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক সফল মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে গণমানুষের নেতা।
চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের স্বার্থে ও অধিকার আদায়ে বারবার প্রকম্পিত করেছেন চট্টলার রাজপথ। চট্টগ্রামবাসীর সকল বিপদে আপদে সবার আগে ছুটে যেতেন তিনি। শারীরিকভাবে নানা ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবেলা করলেও জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তার মনোবল ও সাহস ছিল অটুট।
তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেই আদর্শ হিসেবে বুকে ধারণ করে ছাত্রজীবনেই। আর তখন থেকেই জড়িয়ে পড়েন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। এরপর আর থেমে থাকেননি এক মুহূর্তের জন্যও।
মুক্তিযুদ্ধ শুরুর দ্বিতীয় দিনে নুর আহাম্মদ সড়কের নেভাল অ্যভিনিউ মোড়ে লড়াই করতে গিয়ে গ্রেফতার হন তিনি। এরপর ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ শেষে গিরিসংকূল পাহাড়ি এলাকা দিয়ে সদলবলে ঢুকেন দেশে। প্রাণপণ লড়াই করেন দেশমাতৃকার জন্য। মুক্তিযুদ্ধের পর জড়িয়ে পড়েন শ্রমিক লীগের রাজনীতিতে।
১৯৭৫ সালে জাতির জনককে হত্যা করা হলে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে ভারতে গিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। ফিরে এসে চট্টগ্রামকে ‘সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন’ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে এসে হারান ঘনিষ্ঠ বন্ধু মৌলভী সৈয়দকে। পরবর্তীতে দীর্ঘ সামরিক শাসনের সময় মহিউদ্দিন চৌধুরীকে বেশ কয়েকবার কারাবরণ করতে হয়েছিল।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষা আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলনসহ চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের স্বার্থ রক্ষার আন্দোলনে বার বার রাজপথে নেমেছেন তিনি। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী মহিউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র। টানা ১৭ বছর এ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে দক্ষতা সাথে ও সফলভাবে পরিচালনা করে নগরবাসীকে একটি আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন নগরী উপহার দিতে সক্ষম হন তিনি।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে উত্থান-পতন ও নানান ঘটনাপ্রবাহে চট্টলবীরে পরিণত হওয়া মহিউদ্দিন চৌধুরী ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর নগরীর একটি ক্লিনিকে ইন্তেকাল করেন।