সোমবার , অক্টোবর ৭ ২০২৪
শিরোনাম
Home / জাতীয় / মহান মে দিবস আজ

মহান মে দিবস আজ

সবুজ অরণ্য। চট্টবাংলা প্রতিনিধি -ঃ
আজ মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১৩৩ বছর ধরে বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে আসছে দিনটি। শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপ্রেরণার উৎস এই দিবসটি মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠারও দিন। শ্রমিকদের শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটারও দিন এটি। তবে এবারের প্রেক্ষাপট একেবারেই ভিন্ন।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের (কোভিট-১৯) সংক্রমণে বিধ্বস্ত পৃথিবী আজ। বিশ্বের কোটি কোটি শ্রমজীবী মানুষ কাজ হারিয়ে অনাহার- অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তাদের ফিরতে হচ্ছে কল-কারাখানায়। ঠিক এমন একটি সময়ে বিশ্ববাসী পালন করতে যাচ্ছে শ্রমিকের অধিকার আদায়ের ঐতিহাসিক দিন ‘মহান মে দিবস’।
প্রতি বছর নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে দিনটি পালিত হলেও এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, করোনাভাইরাস বিস্তাররোধে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে এ বছর সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা বাতিল করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, সোনার বাংলা গড়ে তুলি’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেশে শুক্রবার (১ মে) পালিত হবে মহান মে দিবস।
মহান মে দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াল থাবা আঘাত এনেছে। এর ফলে গভীর সংকটে পড়েছে শিল্প-প্রতিষ্ঠানসহ দেশের শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষ। এ পরিস্থিতিতে সরকার জনগণের পাশে থেকে ত্রাণকাজ পরিচালনাসহ সর্বাত্মক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।’
সরকারের পাশাপাশি স্ব-স্ব শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মালিকদেরও শ্রমজীবী মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। একইসঙ্গে ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সকল শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও কার্যক্রম আরও সুদৃঢ় হয়েছে। মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক বাজায় রাখা, নিরাপদ কর্ম পরিবেশ ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি’।
মহান মে দিবস শ্রমজীবী-মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক অবিস্মরণীয় দিন উল্লেখ করে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশের মেহনতি মানুষের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা এবং তাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দিবসটি উপলক্ষে প্রতিবছর বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠন নানা অনুষ্টানমালার আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতে জনসমাগম, সভা, সেমিনার এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনগুলো। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সহযোগী সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগ ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলেরও আনুষ্ঠানিক কোনো কর্মসূচি নেই।
দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে আনুষ্ঠানিকতার চেয়ে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি সবার আগে।’
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে শ্রমিকসংগঠনগুলোকে সকল প্রকার জনসমাগম থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক এ মহামারির মধ্যে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক মালিকরা প্রয়োজনে কারখানা খোলা রাখতে পারবেন। তবে কঠোভাবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে। এক্ষেত্রে শিল্প পুলিশ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর এবং স্বাস্থ্য অধিদফরের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকেরা শ্রমের উপযুক্ত মূল্য এবং দৈনিক অনধিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশ গুলি চালায়। এতে অনেক শ্রমিক হতাহত হন। তাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে দৈনিক কাজের সময় আট ঘণ্টা নির্ধারণ হয়। এরপর থেকে দিনটি ‘মে দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

এটি পড়ে দেখতে পারেন

মহামারি ও অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে পৃথিবী দ্রুত পুরনো রূপে ফিরবে, আশা তথ্যমন্ত্রীর

  করোনা মহামারি ও অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে পৃথিবী দ্রুত আবারো পুরনো রূপে ফিরবে বলে আশাপ্রকাশ …