মঙ্গলবার , জানুয়ারি ১৪ ২০২৫
শিরোনাম
Home / জাতীয় / ওএমএস’র পণ্যে অনিয়ম ঠেকাতো কিউআর কোড চালু করল কালিহাতী উপজেলা প্রশাসন

ওএমএস’র পণ্যে অনিয়ম ঠেকাতো কিউআর কোড চালু করল কালিহাতী উপজেলা প্রশাসন

চট্টবাংলা ডেস্ক-ঃ
বর্তমান মহজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সারাদেশে অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য খোলা বাজারে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা চালু করেছেন। কিন্তু মুনাফালোভী ডিলাররা নানাভাবে এই পণ্য বিক্রিতে অনিয়ম করেই যাচ্ছিল।
সরকার নানামূখী ব্যবস্থা নিয়েও যখন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিলোনা মুনাফালোভী ডিলারদের। ঠিক তখনই টিসিবি পণ্য বিক্রিতে অনিয়ম ঠেকাতে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আলোর মুখ দেখাল উত্তরের জেলা টাঙ্গাইল কালিহাতি উপজেলার নির্বাহী অফিসার শামীম আরা নিপা।
বর্তমানে দেশের এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও কর্মক্ষম হতদরিদ্র মানুষের জন্য Open Market Sale (OMS) ১০ টাকা কেজির চাল নিয়ে বহু ‘নয়-ছয়’ ঘটছে। ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার সুযোগটিই বারবার গ্রহণ করা হয়েছে এসব ক্ষেত্রে। ওএমএস-এর খোলা বাজারে বিক্রির চাল নিয়ে, দুর্বৃত্ত’দের ‘চালবাজি’ বন্ধ করে দেয়ার পথ দেখিয়েছেন তিনি।
গত বেশ কিছুদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে একটি সহজ পদ্ধতিতে কালিহাতি উপজেলার দুটি পৌরসভার ২৪০০ কর্মহীন মানুষকে ডিজিটাল কার্ডে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির ব্যবস্থা করেছেন কালিহাতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আরা নিপা।
Open Market Sale (OMS) চাল বিক্রি ব্যবস্থাপনার সব’চে বড় দুর্বলতা হচ্ছে জালিয়াতির মাধ্যমে ডিলারদের বিক্রি দেখানো এবং অসৎ ক্রেতাদের একাধিকবার নির্ধারিত পরিমান চাল (প্রতিবার ১০ কেজি) উত্তোলন। ইউএনও শামীম আরা নিপা এই সুযোগটি বন্ধ করার জন্য তথ্যভাণ্ডার তৈরি করেছেন।
যেখানে যাদের জন্য চাল বিক্রির কার্যক্রম, ডিলার অথাৎ বিক্রেতার নাম ও ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য রয়েছে। আর ক্রেতাদের দেয়া হয়েছে QR Code যুক্ত ডিজিটাল কার্ড। এই কাজে তিনি স্থানীয় প্রতিভাবন কলেজ ছাত্র, আল আমিন ও তাঁর দলের সদস্যদের সহযোগিতায় বানিয়ে নিয়েছেন একটি অ্যাপ। রাতদিন ২৪ ঘন্টা কাজ করেছেন তাঁরা। এই অ্যাপ OMS ডিলার তার মোবাইল ফোনে ডাউনলোড করে নিয়েছেন। কোনো ক্রেতা চাল কিনতে এলে তার কার্ডের QR Code স্ক্যান করে পরিচয় যাচাই করবেন।
এতে দুই পক্ষের তথ্যই খুব সহজেই তদারকি সম্ভব। OMS এর চাল একজন ক্রেতা কি পরিমান কিনতে পারবেন সেটি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত আছে, আবার বিক্রেতা বা ডিলার কী পরিমাণ চাল বিক্রি করবেন সেটার পরিমাণও নির্দিষ্ট। ডিলার চাইলেই এক্ষেত্রে কার্ড ছাড়া অন্যত্র চাল বিক্রি করতে পারবেনা।
শুধু তাই নয়, এই অ্যাপ চলমান করোনাকালে মানুষকে সুরক্ষা দিতেও সক্ষম। যেহেতু ডিলাররা অ্যানড্রোয়েড ফোনের মাধ্যমে অ্যাপে একবার লগইন করেই কার্ডের QR Code স্ক্যান করে চাল বিক্রি করবে। সঙ্গে সঙ্গেই তা ইলেক্ট্রনিক হিসেবের আওতায় চলে আসবে, ফলে ডিলারদের কাগজে কলমে মাস্টাররোল তৈরির ঝামেলা ও টিপসই নেবার মুহূর্তে ভাইরাস সংক্রমণের যে ঝুঁকির সৃষ্টি হয় তা অনেকটাই কমে যাবে।
এতদিন চালের ক্রয়-বিক্রয়ের পরিমাণ সঠিকভাবে যাচাই করা হতোনা। ফলে নানা ধরনের নেতিবাচক ঘটনার খবর আসতো। এখন শামীম আরা নিপার পদ্ধতিতে সহজেই এই তথ্য পাওয়া যাবে। ফলে কেউ চাইলেই অতি সহজে দুর্নীতি করতে পারবে না।
উল্লেখ্য যে, গত রবিবার (১৯ এপ্রিল) এই পদ্ধতি অনুসরণ করে ২৪০০ কর্মহীন মানুষের কাছে ১০ টাকা কেজির OMS চাল বিক্রি করা হয়েছে।
A2i এবং ICT মন্ত্রণালয় এই ঘোর দুর্দিনে টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার ইউএনও শামীম আরা নিপার দেখানো পথটিকে পুরোদেশে ছড়িয়ে দেবেন কিনা সেটাই দেখবার বিষয় এখন।
OMS এর চাল দরিদ্র মানুষের হাতে পৌঁছাবার নিশ্চিত পদ্ধতি উদ্ভাবন ও প্রণয়নকারী শামীম আরা নীপা। তিনি ২৯ তম ব্যাচের বিসিএস কর্মকর্তা। ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু থানার মোহাম্মদ জয়নুদ্দিন মাস্টার’র (অবসরপ্রাপ্ত) ছোট মেয়ে তিনি। শামীম আরা নীপা বর্তমানে টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (UNO)হিসেবে কর্মরত আছেন।

এটি পড়ে দেখতে পারেন

মহামারি ও অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে পৃথিবী দ্রুত পুরনো রূপে ফিরবে, আশা তথ্যমন্ত্রীর

  করোনা মহামারি ও অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে পৃথিবী দ্রুত আবারো পুরনো রূপে ফিরবে বলে আশাপ্রকাশ …