অভি পাল) (প্রতিনিধি)
বন্দর নগরীতে আকবরশাহ থানাধীন উত্তর কাট্টলী ঈশান মহাজন সড়কের ছোট কালীবাড়িতে মন্দিরের শতবর্ষী পুকুর ভরাট ও কালী মন্দিরের শ্মশানে লাশ নেওয়ার রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে দেওয়াল নির্মাণের প্রতিবাদে কালীবাড়ি এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে একটি বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৯শে জুন) বিকেলে কাট্টলী সুরক্ষা পরিষদের উদ্যোগে বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে বৃষ্টিতে ভিজে মন্দিরের শতবর্ষী পুকুর ভরাটকারী ও মন্দিদের জায়গা দখল করে শ্মশানে লাশ নেওয়ার রাস্তায় দেওয়াল নির্মাণকারীদের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন করেন।
উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, “আমরা এই এলাকার হিন্দু সমাজের মানুষেরা কিছু দুষ্কৃতকারীদের কাছে প্রতি নিয়ত নির্যাতিত হয়ে আসছি। এইবার তারা আমাদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে। পেশীর জোড় দেখিয়ে আমাদের মন্দিরের শতবর্ষী পুকুর ভরাট করেছে। আমাদের মন্দিরের শ্মশানের একটি মাত্র রাস্তা, সেই রাস্তায় দেওয়াল তুলে দিয়েছে। ফেসবুকে প্রতিবাদ জানানোর কারণে মন্দিরের পুকুর ভরাটকারী ও মন্দিরের জায়গা দখল করে শ্মশানের রাস্তায় দেওয়াল নির্মানকারী মিজানের নেতৃত্বে আমাদের হিন্দু পরিবারের উপর হামলা করা হয়েছে, বাড়ি ঘরে ভাংচুর করা হয়েছে। এই এলাকার সনাতন ধর্মের কেউ মারা গেলে শেষকার্য সম্পাদন করার জন্য শ্মশানে লাশ নিয়ে যাওয়ার কোনো রাস্তা রাখা হয়নি। আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে, যদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা কঠিন আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবো।”
উক্ত মানববন্ধনে শ্রী শ্রী রক্ষা কালী মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ, পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ সহ কাট্টলী ছোট কালীবাড়ি এলাকার পুরুষ, মহিলা, যুবক, বৃদ্ধ নির্বিশেষে সর্বস্তরের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা উপস্থিত ছিলেন।
পুকুর ভরাটের বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের উপ পরিচালক মিয়া মাহামুদুল হক বলেন, “আমাদের নগর কার্যালয়ের একটি টিম পুকুর ভরাটের স্থানটি পরিদর্শন করেছেন, সেখানে গিয়ে আমরা পুকুর ভরাটের সত্যতা পেয়েছি। ভরাটকারী মিজানসহ সেই দাগের মালিক পাপ্পু সেন এবং প্রিতম সেনকে আমরা নোটিশ দিয়েছি। আগামী ২৫শে জুন এই সংক্রান্ত শুনানিতে পর্যালোচনা করে আমরা পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।”
এসকল বিষয়ে আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়ালী উল্লাহ বলেন,”বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনার কোনো সত্যতা আমরা এখনো পাই নি, তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে দোষীদের বিরোদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জানতে পারা যায়, পুকুর ভরাটকারী মিজান ১০ নং উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন মঞ্জুর সমর্থক। তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে এলাকায় বিভিন্ন মাদক ব্যবসা, জায়গা দখলসহ বিভিন্ন অপরাধ ও অনিয়মকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন।