মো: জাবেদুর রহমান : যুগের সাথে তাল মিলিয়ে উদ্ভাবিত বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার বিষয়কে কাজে লাগিয়ে পটিয়ায় দ্রুত গতিতে সম্প্রসারণ ঘটছে উন্নত প্রযুক্তির মৎস্য চাষ পদ্ধতির।
আর তারই সুফল পেয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামের মৎস্য চাষীরা।
পটিয়া উপজেলার মৎস্য সম্পদ বিষয়ক তথ্য থেকে জানা যায়, পটিয়া উপজেলার মোট দীঘি ও পুকুরের সংখ্যা সাড়ে ৯ হাজারেরও বেশি। মৎস্য খামার রয়েছে ১২৬ টি। বার্ষিক মাছ উৎপাদন হয় প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন।
পটিয়ায় মোট মৎস্য চাষির সংখ্যা ২২৩০ জন। তন্মধ্যে রেজিস্টার্ড মৎস্য চাষী রয়েছেন ১১৬৬ জন। মোট নার্সারি পুকুরের সংখ্যা ৫২০ টি। মোট মৎস্য নার্সারির সংখ্যা ১৭৫ টি।
চক্রশালায় ১টি সরকারি মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার ও ইউনাইটেড অ্যাকুয়া হ্যাচারি এবং হযরত শাহজালাল হ্যাচারি নামে ২টি বেসরকারি হ্যাচারি আছে। নিবন্ধনকৃত জেলে রয়েছেন ৯৫০ জন।
ইতোমধ্যে পটিয়ার হাইদগাঁও, কেলিশহর ও ধলঘাট ইউনিয়নে ৮০-৯০ টিরও বেশি পোনার পুকুরে পোনা চাষ হচ্ছে।
পটিয়া খরনা ইউনিয়নে নব্বই দশক থেকে ১২ একর জায়গা লিজ নিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে মনোসেক্স তেলাপিয়ার উৎপাদন শুরু করে ইউনাইটেড একুয়া হ্যাচারি। ২০০৩ ও ২০০৫ সালে এই হ্যাচারী দুইবার মৎস্য উৎপাদনে বিশেষ অবদানের জন্য জাতীয় পুরস্কার পায়।
এ বিষয়ে পটিয়া উপজেলা মৎস্য সিনিয়র অফিসার লুৎফুর রহমান জানান, পটিয়া উপজেলায় মৎস্য উৎপাদনে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। পটিয়ায় প্রায় সাড়ে ৯ হাজার পুকুর রয়েছে। যেগুলোতে বিভিন্ন মাছের চাষ করে মাছ চাষীরা।
মাছ চাষের জন্য মানসম্পন্ন পোনা প্রাপ্তিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও জানান তিনি।
ইউনাইটেড একুয়া হ্যাচারির ম্যানেজার মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান জানান , হ্যাচারি গুলো করোনা মহামারীর কারণে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।হ্যাচারিতে মনোসেক্স তেলাপিয়া উৎপাদনের সময়কাল হচ্ছে ফেব্রুয়ারি হতে এপ্রিল পর্যন্ত।
মহামারী করোনা কারণে এ বছর আমাদের উৎপাদিত মনোসেক্স তেলাপিয়া পোনাগুলো যথাসময়ে বিক্রি করতে না পারায় পোনার খাদ্য , কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ বিল, সর্বোপরি পোনা মারা যাওয়ার কারণে আমাদের বিরাট অংকের লোকসান গুনতে হয়েছে। এ হ্যাচারির প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে আমাদের এত লোকসান গুনতে হয়নি যা এ করোনা মহামারীতে হয়েছে।
উল্লেখ্য দক্ষিণ চট্টগ্রামের অধিকাংশ পোনা সরবরাহ করা হয় পটিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে। তাছাড়া কুমিল্লা ও রাউজানের হালদা নদী থেকেও রেনু এনে পুকুরে ফেলেন পটিয়ার মৎস্য চাষীরা। পরবর্তীতে রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে মাছের পোনা বিক্রি করেন তারা। পটিয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন ভোরে পুকুরের পোনা নিয়ে অন্য এলাকায় সরবরাহ করেন মৎস্য চাষীরা।