========== সত্যপ্রিয় শীল ==========
কাজি আবদুল গণি ছাবেরী। বীর প্রসবীনি,শিক্ষা-
সংস্কৃতির আতুরঘর শহরতলী বোয়ালখালী উপজেলার স্বীয় ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী বিদ্যাপীঠ ” কধুরখীল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়’র” প্রতিথযশা প্রধান শিক্ষক তিনি।
তিনি ভাষা সৈনিক প্রফেসর আবুল কাশেমের জন্মভূমি চন্দনাইশের সাতবাড়িয়া গ্রামের স্বনামধন্য কাজি পরিবারে ১৯৩৮ সালে (৫ মে) আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন।
এই গুণী শিক্ষক সাতবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্টিকুলেশন পাশ করে ভর্তি হন তৎকালীন দক্ষিণ চট্টগ্রামের উচ্চ শিক্ষার প্রবেশ দ্বার স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজে। এই কলেজ থেকেই বি.কম পাশ করে ১৯৫৭ সালে কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ।
তিনি শিক্ষকতা পেশায় থাকাকালীন সময়ে বি.এড ভর্তি হন এবং পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথমস্থান অধিকার করেন। এরপর ১৯৭৪ সালে উক্ত বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি লাভ করে দীর্ঘ প্রায় একান্ন বছর এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।
নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে বিদ্যালয় সংলগ্ন কধুরখীল,আকুবদণ্ডি ও গোমদণ্ডি গ্রামে হয়ত এমন কোন ঘর পাওয়া যাবে না যেখানে কাজি আবদুল গণি ছাবেরির ছাত্র নেই। যাঁর জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়েছে বিদ্যালয় সংলগ্ন গ্রামগুলো।
তিনি শুধুমাত্র একজন শিক্ষাগুরুই ছিলেননা।ছিলেন সংস্কৃতিমনা, সামাজিক আন্দোলনের অগ্রদূত, সামাজিক সংগঠক সর্বোপরি সমাজের অভিভাবক। যাঁর জ্ঞান বৃক্ষের শাসনে-সোহাগে সমাজে প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, শিক্ষক, আইনজীবী, রাজনৈতিক নেতা ও সংগঠক।
তাঁর সার্বিক সহযোগিতায় বাংলাদেশে বিদ্যালয় পর্যায়ে প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় এই বিদ্যালয়ে ১৯৬৫ সালে। তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড বাস্তবায়ন কমিটির যৌথ আহবায়ক। তাঁর সাথে যৌথ আহবায়ক হিসেবে ছিলেন প্রয়াত রাজনীতিবিদ আবদুল্লাহ আল হারুন।
তিনি দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে নেতৃত্ব প্রদান করে গেছেন,বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার। তৎকালীন সময়ে উনার প্রস্তাবনায় চট্টগ্রামে সর্বপ্রথম একুশে মেলা উদযাপন শুরু হয়।
তিনি নিজ হাতে প্রতিষ্ঠা করেন বোয়ালখালী উপজেলা শিক্ষক সমিতি। পালন করেন বোয়ালখালী ক্রীড়া সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব। তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম আর তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠা লাভ করে আকুবদণ্ডি ক্রীড়া সমিতি।
ছিলেন কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র সমিতির স্বপ্নদ্রষ্টা। কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ অর্জন করেন একুশে মেলা শিক্ষা পদক, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি পদক।
মহান এই ব্যক্তি আমার শিক্ষাগুরু। ছিলেন ছাত্র সমাজের যোগ্য অভিভাবক। তিনি ২০১৩ সালের ৫ মে মৃত্যু বরণ করেন। আজ তাঁর ৭ম মৃত্যু বার্ষিকীতে এই বটবৃক্ষ, জ্ঞানের বাতিঘরের প্রতি জানায় শ্রদ্ধাঞ্জলী
লেখক- শিক্ষক ও সংগঠক
বাংলাদেশ গীতা শিক্ষা কমিটি,বোয়ালখালী শাখা