অভি পাল,মহানগর প্রতিনিধি,চট্টগ্রাম
রাজনীতির দল বদলের সস্তার খোলা বাজারে অনেকেই গা ভাসালেও, ছাত্রজীবনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজপথে রাজনীতির যাত্রা শুরু করে নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন যুবলীগের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন অধ্যাপক পার্থ সারথি চৌধুরী।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা পিতার এই সন্তান এক যুগ ধরে দায়িত্ব পালন করছেন সংগঠনের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। ৮৬ তে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে থানা,উপজেলা,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে জেলা পর্যায়ে দক্ষতার সাথে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে রাজনীতির মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। বেঈমানী করেননি, এখনও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু আদর্শ ধারণ করে চলেছেন।
রাজনীতির ৩৬ বছর পার করে অদ্যাবধি গণমানুষের কান্ডারী হিসাবে মানুষের পাশে রয়েছেন এই বিপ্লবী মানুষটি। শুধু চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার নেতাই নয়, সমগ্র সংগ্রামী, বীর জনতার ও সৎ দেশ প্রেমিকদের আদর্শবান নেতা তিনি। তিনি তিন যুগের ইতিহাসে রাজনীতিতে অনেক আন্দোলনের সফল এক মহানায়ক। এক বিপ্লবী, সংগ্রামী ব্যক্তিত্ব এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন জননেতা।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন এর নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের কাছে পরিচ্ছন্ন, বিশ্বাসী, পরীক্ষিত, নিবেদিত ও পরিশ্রমী নেতা হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক পার্থ সারথি চৌধুরী।
রাজনীতির অঙ্গনে পার্থ সারথির সংক্ষিপ্ত অবদান :
১৯৮৬ থেকে ১৯৯৬ পযন্ত স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়াই করে জেলা তথা মৌলবাদ অধ্যুষিত সাতকানিয়ায় ছাত্রলীগের ভিতকে শক্তিশালী করেছেন।২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত জোট ক্ষমতাসীন হয়ে তার বাড়িতে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করলে তিনি আক্রমণকারী জামাত শিবিরের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ওই সময়রের বৈরী পরিবেশে কেবল মামলা করেই ক্ষান্ত হননি,তাদের অনেককে জেল খাটিয়ে মুচলেখা দিতে বাধ্য করেছিলেন এই মর্মে যে, তারা কখনো অধ্যাপক পার্থ সারথি সহ হিন্দু জনগোষ্ঠী ও আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের উপর হামলা করবে না।জামাতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাওলানা মুমিনুল হক চৌধুরী এবং জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের ব্যুরো চীফ হেলাল হুমায়ুন ও এই মুচলেকা নামায় স্বাক্ষর করেছিল।
২০১৩ সালের ২৮ শে ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধী দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হলে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা চট্টগ্রাম- বান্দরবান -কক্সবাজার জেলার প্রবেশপথে তথা সাতকানিয়ার কেরানীহাটে সহিংসতা চালিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ অবরোধ করে রাখে।চরতি,কাঞ্চনা,ছদাহা,বাজালিয়া কেঁওচিয়া, কালিয়াইশসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে হামলা চালায়। ঐ সময় পার্থ সারথি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করে যুবলীগের মাধ্যমে জামাত শিবিরের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করে কেরানীহাট অবরোধ মুক্ত করে।চরতি ইউনিয়নে গণ জাগরণ মঞ্চ করে জামাত শিবিরকে প্রতিহত করে।কালিয়াইশ,বাজালিয়া ,ছদাহা ও কেঁওচিয়া ইউনিয়নের যুবলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে জামাত শিবিরের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করে। জামাত-শিবির রাস্তায় রাস্তায় গাছ কেটে ফেলে যোগাযোগ ব্যবস্থা অচলাবস্থা সৃষ্টি করলে পার্থ সারথির নেতৃত্বে যুবলীগ নেতাকর্মীরা রাস্তা থেকে ফেলে রাখা গাছ অপসারণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক করে।
২০১৩ সালে বিভিন্ন সভা ও বিভিন্ন মিডিয়ার বিএনপি সরকারের সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ও এলডিপির সভাপতি,চন্দনাইশ – সাতকানিয়ার সাংসদ কর্নেল অলি আহমদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি চট্টগ্রাম ১৪ ও ১৫ এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ দলীয় মহিলা সাংসদ চেমন আরা তৈয়ব এবং টুঙ্গিপাড়ার মেয়েদের উদ্দেশ্যে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রাখলে কর্নেল (অবঃ) অলি আহমদকে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে পার্থ সারথি যুবলীগ নেতা কর্মীদের নিয়ে তাকে অবরূদ্ধ করে এবং এ ধরনের বক্তব্য প্রদানের জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন।
২০১৫ সালে বিএনপি- জামাত পেট্রোলবোমার আন্দোলন তথা অগ্নিসন্ত্রাস করলে,সাতকানিয়া, চন্দনাইশ লোহাগাড়ায় আওয়ামী যুবলীগের নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে সড়ক পাহাড়ার ব্যবস্থা করেন অধ্যাপক পার্থ সারথি। প্রাণের মায়া তুচ্ছ করে সার্বক্ষণিক সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া ও চন্দনাইশে সড়ক পাহাড়ার কার্যক্রম মনিটরিং করেন তিনি।ফলশ্রুতিতে এখানে আর বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ তথা পেট্রোলবোমা মেরে অগ্নি সন্ত্রাসের আন্দোলন সফল হতে পারেনি এবং চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল অব্যাহত থাকে।
রাজনীতির অঙ্গনে পার্থ সারথি ও তার পরিবারের উপর হামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী :
২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার জামাত দলীয় সাংসদ ও হুইপ শাহজাহান চৌধুরীর নির্দেশে জামাত শিবিরের দুই শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী একে ৪৭ সহ বিভিন্ন প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র সজ্জিত হয়ে হয় অধ্যাপক পার্থ সারথি কে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়িতে আক্রমণ চালায়। তার বৃদ্ধা মায়ের উপর নির্যাতন চালায় সন্ত্রাসীরা।
২০২১ সালের নিবার্চনে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আখতার হোসেনের পক্ষে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করায় বিএনপি জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এলডিপি নেতা জসিম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর নৃশংস হামলার শিকার হন তিনি।। হামলাকারীরা তাকে ঐ সময় তিন তিনবার হত্যা চেষ্টা করে এবং তাকে বহনকারী এক্সিও গাড়িটিও ভাঙচুর করে। শুধু তাই নয়, পার্থ সারথিকে মারধর ও মাথায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা করতে না পেরে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে।
মানবিকতায় পার্থ সারথির অবদান:
দৈব দুর্বিপাকে দুর্যোগে এবং আগুনে ঘরবাড়ি পুড়ে যাওয়া মানুষের পাশে থেকে সবসময় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন পার্থ সারথি।মাতৃভূমি মায়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদেরকে ও ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন।
তাছাড়া মহামারী করোনার শুরুতে মানুষ যখন চিকিৎসা, খাদ্যসহ নানা সংকটে হিমশিম খাচ্ছিল,প্রিয়জনকে ছেড়ে দূরে সরে যাচ্ছিল তখন তিনি সতীর্থদের নিয়ে ভয়-শঙ্কা উপেক্ষা করে বিপন্ন মানুষের দ্বারে দ্বারে ছুটতে থাকেন কখনো অক্সিজেন নিয়ে, কখনো অ্যাম্বুলেন্সে তুলে হাসপাতালে নেওয়ার কাজে। আবার কখনো লকডাউনে খাবার সংকটে পড়া পরিবারগুলোর জন্য ছুটে যান কোথাও খাদ্য সামগ্রী উপাদান নিয়ে ,কোথাও রান্না করা খাবার নিয়ে। করোনাকালীন সময়ে করোনায় মৃত লোকদের দাফন\সৎকারের জন্য যুবলীগের কর্মীদের নিয়ে মানবতার দল গঠন করে তার নেতৃত্ব দেন তিনি