চট্টবাংলা ডেস্কঃ ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার থানায় চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহেদ খানের দায়ের করা চাঁদাবাজির মামলা থেকে সাবেক নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি সহ সাত নেতা-কর্মীকে অব্যাহতি প্রদান করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার ৩১ ডিসেম্বর মহানগর হাকিম সরোয়ার জাহান শুনানি শেষে রনি সহ সকল ছাত্রলীগ নেতাদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
রনি ছাড়া অব্যহতি পাওয়া অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন মজিবুর রহমান রাসেল, তানভীর মেহেদি মাসুদ, নেওয়াজ শরীফ অমি, আরিফুর রহমান মাসুদ, কিরণ ও নুরুল হুদা মিঠু। এদের সকলেই মহানগর,কলেজ ও বিভিন্ন ওয়ার্ড ছাত্রলীগ কমিটির দায়িত্বে রয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়, নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি ৩১ মার্চ বিজ্ঞান কলেজে তার দলবল নিয়ে হইচই শুরু করেন। তাঁর নির্দেশে তানভীর ও নেওয়াজ তাঁদের হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে অধ্যক্ষের ঘাড়ে ঠেকিয়ে গুলি করতে চায়। এ সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রনি ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে জানে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় তাকে। প্রাণে রক্ষা পেতে কলেজের পিয়নসহ অন্যদের সহযোগিতা চাইলে নুরুল আজিম অধ্যক্ষকে কিলঘুষি মারতে থাকেন।
জানা যায়, প্রবেশপত্রের সঙ্গে উন্নয়ন ফি বাবদ পাঁচ হাজার টাকা নেওয়াকে কেন্দ্র করে ২৯ মার্চ বিজ্ঞান কলেজে আন্দোলন করেন নুরুল আজিম রনির নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা। সেদিন কলেজ কর্তৃপক্ষ ৩১ মার্চ বাড়তি ফি ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেয়।
পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করায় ৩১ মার্চ দুপুরে নুরুল আজিম রনি আবারও ওই কলেজে যান। তখন টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে রনি ও তার কর্মীরা অধ্যক্ষকে চড়-থাপ্পড় মারেন বলে অভিযোগ ওঠে।
মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ ড. জাহেদ খানকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা বাড়তি ফি না দিয়ে চলে যেতে চাইলে অধ্যক্ষকে অফিসে বসিয়ে রেখে টাকা আদায় করা হয়। কলেজের অধ্যক্ষ ২৯ মার্চ ২০১৮ ইং তারিখে আমাদের প্রতিবাদের মুখে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি হিসেবে আদায় করা বাড়তি ৫ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার কথা দিয়েছিলেন। ৩১ মার্চ তার ওই টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। সেদিন অভিভাবকরা সকাল ১০টায় কলেজে গিয়েও টাকা ফেরত না পাওয়ায় আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের কল পেয়ে আমি কলেজে যাই। আমাকে দেখেই অধ্যক্ষ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে আমরা তাকে অফিস কক্ষে বসিয়ে কথা বলি। আদায় করা বাড়তি ফি ফেরত দিতে বাধ্য করি।
নুরুল আজিম রনি আরো বলেন, আমাদের অনড় অবস্থানের কারণে ৩১ মার্চ ২০১৮ ইং তারিখে কলেজ কর্তৃপক্ষ ১১০ থেকে ১২০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নেওয়া বাড়তি ফি ফেরত দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ যে অন্যায়ভাবে টাকাগুলো নিয়েছিল, ফেরত দেওয়ার মাধ্যমে সেটাই হয়। আমরা বাকি আরও প্রায় সাড়ে আটশ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিও জানিয়েছিলাম।