প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ৭, ২০২৫, ৯:৩৪ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০, ৩:৪৪ অপরাহ্ণ

=============== মুজিব উল্ল্যাহ্ তুষার।
আজ বিশ্ব মা দিবস। (১০ মে) পৃথিবীর সকল ‘মা’কে জানাই শ্রদ্ধা। প্রত্যেক মা সন্তানের কথাবার্তা ও আচরণ দেখেই তাদের সব অনুভূতি বুঝতে পারেন। আমার নিজের মা ও এর ব্যতিক্রম নয়।
পৃথিবীতে আমাদের সবথেকে আপন ও কাছের মানুষ হচ্ছে মা। কবি কাজী কাদের নেওয়াজ মাকে কেন্দ্র করে ছড়া লিখতে গিয়ে যথার্থই বলেছেন, ‘মা কথাটি ছোট্র অতি জেনে রেখ ভাই, তাহার চেয়ে মধুর নাম ত্রিভুবনে নাই’।
‘মা কে নিয়ে যত উক্তি’র মধ্যে বলা হয়েছে, ‘মা জননী চোখের মনি, অসীম তোমার দান, খোদার পরে তোমার আসন আসমানের সমান, ত্রিভুবনে তোমার মত হয় না কারো মান'।
আমরা বিনিময়ে মা’কে কখনো কিছু দিতে না পারলেও আজ মা দিবসে এটুকু অন্তত বলতে পারি ‘মা’ আমি তোমাকে ভালোবাসি। ভালোবাসি তোমার আঁচল। আবার খোঁজ-খবরও নিতে পারি। এটি শুধু এই বিশেষ দিবস উপলক্ষে নয় সব সময়ই আমরা চাইলে বলতে পারি। এতে করে একদিকে তাঁদের আত্নার প্রশান্তি যেমন বেড়ে যায় অন্যদিকে সন্তানের প্রতি তাদের আস্থার জায়গাটিও আরো প্রশস্ত হয়।
একমাত্র সন্তানের মুখে হাসি ফুটাতে পারলেই মায়ের অন্তর যেন খুশীতে নেচে উঠে। জন্মের পর সন্তানের মুখের ‘মা’ ডাক শোনা যেন মায়ের কাছে পৃথিবীর যেকোন সুর থেকে তা উত্তম। মায়েরা সন্তানের সাফল্য দেখে নিজের জীবনের চূড়ান্ত সাফল্যের আনন্দ লাভ করে। তাই, জীবনে চলার প্রতিটি পদক্ষেপে মায়ের কাছে যেমন দোয়া চাওয়া জরুরী তেমনি বিভিন্ন সময় মাকে উপহার দেয়া, মাকে সাথে নিয়ে উন্মুক্ত বাতাসে ঘুরতে বের হওয়া, পার্কে, নদী বা সমুদ্রের তীরে সংক্ষিপ্ত ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া যায়।
একটি বিষয় চিন্তা করে দেখুন, সারা বিশ্বের যেখানেই যান না কেন মায়ের কোলের চেয়ে শান্তি কোথাও খুঁজে পাবেন না। তাইতো মহান আল্লাহ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ পবিত্র কুরআনে বলেছেন, মা-বাবার সাথে ভালো ব্যবহার করো। যদি তোমাদের কাছে তাদের কোন একজন বা উভয় বৃদ্ধ অবস্থায় থাকে, তাহলে তাদেরকে (রাগ বা বিরক্ত হয়ে) “উহ্” পর্যন্তও বলো না এবং তাদেরকে ধমকের সুরে জবাব দিয়ো না বরং তাদের সাথে মর্যাদা সহকারে কথা বলো। আর দয়া ও কোমলতা সহকারে তাদের সামনে বিনম্র থাকো এবং দোয়া করতে থাকো এই বলে; হে আমার প্রতিপালক! তাদের প্রতি দয়া করো, যেমন তারা দয়া, মায়া, মমতা সহকারে শৈশবে আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন। [সুরা বনী ইসরাইল, আয়াত: ২৩-২৪]
আহলে সুফফার অন্যতম সদস্য ও সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারি সাহাবি হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার উত্তম সাহচর্যের সর্বাধিক অধিকারী কে? তিনি বলেন, তোমার মা। তারপর কে? তিনি বলেন, তোমার মা। আবারও প্রশ্ন করলেন এরপর কে? তিনি বলেন, তোমার মা। লোকটি পুনরায় প্রশ্ন করে জানতে চাইলেন তারপর কে? তিনি বলেন, তোমার বাবা [ সহীহ বুখারী ও মুসলিম]
আল্লাহ প্রবিত্র কুরআনে বলেন, আর আমি মানুষকে তার মা-বাবার সাথে সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভেধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানো হয় দু’বছরে। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার (আল্লাহর) প্রতি এবং তোমার মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। [সূরা লুকমান, আয়াত:১৪]
আরেকটি কথা মনে পড়ে গেল, সেটি হচ্ছে, যাদের এই দিবসে মা নেই তারা কি করবেন। আসলে মায়েদের কোন বিশেষ দিবস হয় না। সুতরাং, শুধু মা দিবসে নয় যেকোন সময় যদি কেউ মায়ের জন্য দোয়া করে, মায়ের আত্নীয় স্বজনের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখে, আল্লাহর রাস্তায় দান করে, এবারের রমজানে সেটিই হতে পারে সন্তানের পক্ষ থেকে মায়ের মুক্তির একান্ত পাথেয়।
সবশেষে বলব, শুধু মা দিবসকে কেন্দ্র করে নয় আমরা সবসময় মায়ের কাছে যত বেশি বিনীত হবো এবং মায়ের জন্য দোয়া করবো, ততবেশি আল্লাহ আমাদের ওপর সন্তুষ্ট হবেন। মা দিবসে সৃষ্টিকর্তার কাছে এই প্রার্থনা করেই শেষ করছি, পৃথিবীর সবার ‘মা’ সুস্থ ও দীর্ঘজীবী হয়ে সুখে-শান্তিতে বেঁচে থাকুক।
Chief Adviser : Prof. Partha Sarathi Chowdhury. Chairman : Manas Chakroborty. Head Office: 40 Momin Road, Chittagong. Editorial Office: Farid Bhaban (2nd floor), in front of Hajera Taju Degree College, Chandgaon, Chittagong. News Desk : Email : chattobanglanews@gmail.com, Hello : 019-2360 2360
Copyright © 2025 চট্টবাংলা. All rights reserved.