প্রিন্ট এর তারিখঃ জুলাই ১৩, ২০২৫, ৯:২৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০, ৩:২৮ অপরাহ্ণ

অনন্যা অর্পিতা। চট্টবাংলা -ঃ
বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর। অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক।
তাঁকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত করা হয়।
রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তাঁর জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়।
তাঁর সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত।
এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
আজ ২৫শে বৈশাখ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। বাঙালি তথা রবীন্দ্র প্রেমী মানুষ সাড়ম্বরে এই দিনটি পালন করেন। অথচ তাঁর শৈশবের জন্মদিন পালনের কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না। পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হওয়ায় বাড়িতে প্রতিমা পূজা বন্ধ হয়ে যায় সঙ্গে হিন্দু পরিবারের সন্তানদের জন্মতিথিতে পূজা, অনুষ্ঠান পালনের রীতি ও।
ঠাকুর পরিবারে জন্মদিন পালনের রীতি প্রচলিত হয়, রবীন্দ্রনাথের মেজ বৌঠান জ্ঞানদা নন্দিনী দেবী নিজের পুত্র (সুরেন্দ্রনাথ) মেয়ে (ইন্দিরা দেবী) জন্মদিন পালনের মধ্য দিয়ে। এর প্রধান অঙ্গ ছিল জলযোগ ও উপহার প্রদান।
১৮৮৭ সালে ২৫ বৈশাখ রবিঠাকুরের প্রথম জন্মদিন পালন উৎসবের সূচনা করেন ভাগ্নি সরলাদেবী চৌধুরানী। তিনি তাঁর আত্মজীবনী ' ঝরাপাতা'-য় লিখেছেন," রবি মামার প্রথম জন্মোৎসব আমি করাই।... অতি ভোরে.. তার তাঁর ঘরে তাঁর বিছানার কাছে গিয়ে বাড়ির বকুল ফুলের নিজ হাতে গাঁথা মালা ও বাজার থেকে আনানো বেল ফুলের মালার সঙ্গে অন্যান্য ফুল ও এক জোড়া ধুতি চাদর তাঁর পায়ের কাছে রেখে প্রণাম করে তাঁকে জাগিয়ে দিলাম।.. আর সবাই জেগে উঠলেন। রবির জন্মদিন বলে একটা সাড়া পড়ে গেল"।
" রাত্রি হল ভোর
আজি মোর
জন্মের স্মরণ পূর্ণ বানী
প্রভাতের রৌদ্রে লেখা লিপিখানি
হাতে করে আমি
দ্বারে আসি দিল ডাক
পঁচিশে বৈশাখ।"
কবিতা: 'পঁচিশে বৈশাখ'
(কবির ৬২তম জন্মদিন শান্তিনিকেতনে লেখেন)
আনুমানিক ১৯৩৭ থেকে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্র জয়ন্তী উদযাপন শুরু হয়। একবার কলকাতায় নিজের জন্মোৎসবে আইসক্রিম খেয়ে বলেছিলেন, " শুধু গান, আবৃত্তি আর বক্তৃতায় জন্মোৎসব সার্থক হয় না। সঙ্গে একটু মিষ্টি মুখের ব্যবস্থাও থাকা দরকার।" সেই থেকে রবীন্দ্র জন্মোৎসবে মিষ্টি মুখের আয়োজন করা হয়।
কবিগুরুর শেষ জন্মদিন পালিত হয় শান্তিনিকেতনে। তাঁর অসুস্থ শরীরের কথা মনে রেখে অনাড়ম্বর ভাবে পালিত হয়। উদয়নের বারান্দায় আরামকেদায় বসে তিনি অনুষ্ঠান দেখেন। এই তাঁর শেষ জন্মদিন তিনি শুনেছেন মৃত্যুর পদধ্বনি , যার প্রকাশ ঘটেছে কবিতায়--
"আমার এ জন্মদিন-মাঝে আমি হারা,
আমি চাহি বন্ধুজন যারা
তাহাদের হাতের পরশে
মর্তের অন্তিম প্রীতিরসে
নিয়ে যাব জীবনের চরম প্রসাদ,
নিয়ে যাব মানুষের শেষ আশীর্বাদ।
শূন্য ঝুলি আজিকে আমার;
দিয়েছি উজাড় করি
যাহা কিছু আছিল দিবার।
প্রতিদানে যদি কিছু পাই,
কিছু স্নেহ, কিছু ক্ষমা-
তবে তাহা সঙ্গে নিয়ে যাই
পারের খেয়ায় যাব যবে
ভাষাহীন শেষের উৎসবে" ।
উদয়ন। শান্তিনিকেতন।
শেষ লেখা'কাব্যগ্রন্থ ৬ মে ১৯৪১
অংকন চিত্র কৃতজ্ঞতায়-অলোকময় তালাপাত্র।
Chief Adviser : Prof. Partha Sarathi Chowdhury. Chairman : Manas Chakroborty. Head Office: 40 Momin Road, Chittagong. Editorial Office: Farid Bhaban (2nd floor), in front of Hajera Taju Degree College, Chandgaon, Chittagong. News Desk : Email : [email protected], Hello : 019-2360 2360
Copyright © 2025 চট্টবাংলা. All rights reserved.