প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ১৩, ২০২৫, ১০:৪০ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০, ২:১৭ অপরাহ্ণ

==================== অশ্রু বড়ুয়া
আজও জাদু-মাখা সেই কন্ঠ যেনো মন্ত্রমুগ্ধতা ছড়িয়ে সুরে সুরে মাতিয়ে তুলেছে ভোরের বাতাসকেও। তাইতো গলা ছেড়ে গাইতে ইচ্ছে করে- মনে পড়ে সেই দিনটি/যেদিন পাখিকে গাইতে দেখে/ আমারও গাইতে ইচ্ছে করে
মনে পড়ে সেই দিনটি...।
বাংলা তথা ভারতীয় উপমাদেশের আধুনিক গানের জগতে সব-স্তরের শ্রোতাদের কাছে অত্যধিক প্রিয় এবং প্রবাদপ্রতিম একটি নাম-মান্না দে। ডাক নাম-প্রবোধ চন্দ্র দে।
জীবনের শুরুর দিকে খেলাধুলাতে বেশ আগ্রহ থাকলেও গান গেয়ে হয়েছেন বিখ্যাত। সঙ্গীত নয়, একজন আইনজীবী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করবেন-এমন চিন্তা চেতনা থাকলেও শেষতক পথ চলেছেন শুধু সঙ্গীতকে সাথী করেই।
বাবার পূর্ণচন্দ্র আর মা-মহামায়া দে। বাবা মায়ের সংস্পর্শ ছাড়াও কাকা কুঞ্চ চন্দ্র দে তাঁকে বেশি অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত করেছেন। প্রথমে কাকা'র কাছে গানের তালিম নেয়া শুরু করলেও পরে ওস্তাদ আমান আলি খান এবং ওস্তাদ আব্দুল রহমান খানের কাছ থেকে হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নেন তিনি।
বাংলা-হিন্দি ছাড়াও পান্জাবি, গুজরাতি, মৈথিলি, ভোজপুরি, অসমীয়া, মারাঠি, কান্নাড়ি, মালায়ালম ভাষাতেও গান গেয়েছেন মান্না দে।
সঙ্গীত জীবনে রেকর্ড করেন সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি গান। যুগে যুগে বাঙালির আবেগের সাথে মিশে রয়েছে মান্না দে'র অসংখ্য গান। জীবনের সঙ্গে নানা মুহূর্তে মান্না দে-র গাওয়া গান আজও বাঙালির হৃদয়কে মথিত করে।
বাঙালির চিরকালীন ভাবনায় অনেক গান মিশে আছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। যে গানই গেয়েছেন তাতে রেখে গেছেন নিজস্ব ছাপ। গায়কী দিয়েই জনপ্রিয় করেছেন অনেক গান। বিশেষ করে সলিল চৌধুরী'র সুরে মান্না দে-র বেশ কিছু গান যেন জীবনের কথা বলে।
শক্তিশালী গানের বাণীতে মান্না দে-র কন্ঠে বহু গান হয়ে উঠেছে আরও জীবন্ত। মানুষের জীবনের নানা ক্ষেত্রে অলংকার হিসেবে যুক্ত করা যায় প্রবাদপ্রতিম এ শিল্পীর কতোইনা গান।
ক্লাসিক্যাল, সেমি ক্লাসিক্যাল, মেলোডি সব গানে জয় করেছেন শ্রোতাদের মন। তাইতো আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে সেইসব গান।
সঙ্গীত ভূবনে অসামান্য অবদানের জন্য ভারত সরকার তাঁকে ১৯৭১ সালে পদ্মশ্রী, ২০০৫ সালে পদ্মবিভূষণ ও ২০০৯ সালে দাদাসাহেব ফালকে সন্মাননায় অভিষিক্ত করে।
এছাড়া ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার মান্না দে-কে রাজ্যের সব্বোর্চ বেসামরিক সন্মান 'বঙ্গ বিভূষণ' প্রদান করে। ইংরেজি ১৯৪২ সাল। শচীন দেব বর্মণের নজরে পড়ে মান্না দে প্রথম পা রাখেন দিল্লিতে।
এক বছরের মাথায় ১৯৪৩ সালে 'তামান্না' ছবিতে প্রথম প্লেব্যাক করার সুযোগ পান তিনি । এরপর শুধু সামনের দিকে পথচলা। একেক পর এক হিট-সুপারহিট গান দিয়ে ভারতীয় চলচ্চিত্রের সঙ্গীতকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন কিংবদন্তী এই কন্ঠশিল্পী।
চিরাচরিত জহর কোট আর টুপিতে জনপ্রিয় ছিলেন মান্না দে। শুধু গান নয়, প্রয়াত হরিবংশ রাই বচ্চনের লেখা 'মধুশালা' অবৃত্তিতেও কন্ঠ দেন তিনি। ২০১২ সালে ৯৩ বছর বয়সেও মুম্বাইতে লাইভ কনসার্টে মাতিয়েছেন দর্শকশ্রোতাদের।
২০০৬ সালে 'উমর' ছবিতে সর্বশেষ গান রেকর্ড করেন তিনি। গানের জগতে বহুমুখী প্রতিভা, স্বর্নকন্ঠী এই শিল্পীর জন্মদিন আজ। আজকের এদিনে কিংবদন্তি'র প্রতি রইল আমার অতল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
লেখক-ঃ সাংবাদিক। গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী
অনুষ্ঠান নির্মাতা- বাংলাদেশ টেলিভিশন-ঢাকা ।
Chief Adviser : Prof. Partha Sarathi Chowdhury. Chairman : Manas Chakroborty. Head Office: 40 Momin Road, Chittagong. Editorial Office: Farid Bhaban (2nd floor), in front of Hajera Taju Degree College, Chandgaon, Chittagong. News Desk : Email : chattobanglanews@gmail.com, Hello : 019-2360 2360
Copyright © 2025 চট্টবাংলা. All rights reserved.