এসময় তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্ভাব্য খাদ্য সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশবাসীকে অধিক পরিমাণে খাদ্য উৎপাদনের আহ্বান জানিয়েছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব সম্প্রদায় আগামী বছর একটি গভীর সংকটের আশঙ্কা করছেন। তাই এখন থেকেই সংকট মোকাবেলায় প্রস্তুতি গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে তাই আগামী দিনের সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবেলায় একগুচ্ছ প্রস্তাবনা পেশ করেছেন সুজন। এ প্রস্তাবনাসমূহ বিবেচনা করে সকলেই যদি আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসে তাহলে বাংলাদেশ সমূহ সংকট থেকে উত্তরণ করতে পারবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। সুজন বলেন আমরা ছোটবেলায় দেখেছি আমাদের পরিবারের দাদী এবং মায়েরা ভবিষ্যতের জন্য মুষ্টি চাল সঞ্চয় করতো। সে মুষ্টি চালগুলো পরিবারের দুঃসময়ে খুবই উপকারে আসতো। সেরকম মুষ্টি চালের একটি প্রস্তাবনা পেশ করেন তিনি। প্রথমত: বাংলাদেশের জনসংখ্যা যদি প্রায় ১৬ কোটি হয় এবং প্রতি পরিবারে সর্বোচ্চ ৫ জন সদস্য হলে প্রায় ৩ কোটি ২০ লক্ষ পরিবার হবে। প্রতি পরিবার যদি একবেলা আহার থেকে ১ মুষ্টি চাল সঞ্চয় করে তাহলে ৩ কোটি ২০ লক্ষ মুষ্টি চাল হবে এবং দুইবেলায় তা হবে ৬ কোটি ৪০ লক্ষ মুষ্টি চাল। যদি ২৫ মুষ্টিতে ১ কেজি চাল ধরা হয় তাহলে ৬ কোটি ৪০ লক্ষ মুষ্টিতে হবে ২৫ লাখ ৬০ হাজার কেজি চাল প্রতিদিন। আর টন হিসেবে তা হবে ২,৫৬০ মেট্রিক টন চাল প্রতিদিন। মাসে যার পরিমাণ হবে ৭৬,৮০০ মেট্রিক টন চাল। আর এভাবে যদি সঞ্চয় অব্যাহত থাকে তাহলে বছরে হবে ৯,২১,৬০০ মেট্রিক টন চাল। অর্থাৎ মুষ্টি চালের সঞ্চয়ের মাধ্যমে বছরে প্রায় ১০ লক্ষ মেট্রিক টন চাল সঞ্চয় করা সম্ভব হবে। দ্বিতীয়ত: আমরা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের নামে অতিমাত্রায় খাবারের অপচয় করে থাকি। দেখা যাচ্ছে যে, কোন একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যত খাবারের আয়োজন করা হয় তার অর্ধেক পরিমাণ খাবার অপচয় হয়ে থাকে। এ অপচয় রোধ করার জন্য সরকার যদি একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলে এবং সাথে সাথে আইনের কঠোর প্রয়োগ করলে সারা দেশে শুধু খাবারের অপচয় রোধ করে আরো ১০ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্য সঞ্চয় করা সম্ভব হতে পারে। তৃতীয়ত: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে পতিত জমির মোট পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি ৮৫ লাখ ১৫ হাজার শতক বা ৪৩ লাখ ৯৩৩১ হেক্টর। পতিত জমি সাধারনত দুই ধরনের, অস্থায়ী পতিত এবং স্থায়ী পতিত জমি। অস্থায়ী পতিত জমি বলতে যেসব জমিতে চলতি বছরে আবাদ বা কোনও ধরনের শস্য উৎপাদন হয়নি, কিন্তু তার আগের বছরে জমিটিতে আবাদ হয়েছে। বর্তমানে হয়তো নোনা পানি ঢুকে জমি চাষাবাদ অযোগ্য হয়ে পড়েছে অথবা বিভিন্ন বন্য প্রাণীর আক্রমনে কৃষকরা চাষাবাদ করতে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে কখনই কোনও ধরনের আবাদ হয়নি বা শস্য উৎপাদন হয়নি এমন জমিকে বলা হয় স্থায়ী পতিত জমি। দেশে স্থায়ী পতিত জমির সংখ্যাই বেশি। আবার দেখা যাচ্ছে যে চাষাবাদ যোগ্য জমিতে বেশি লাভের আশায় চাষাবাদ বহির্ভূত চাষ হচ্ছে। এসব চাষও আগামী ২ বছরের জন্য বন্ধ রেখে শুধু খাদ্য উৎপাদনের জন্য এসব অস্থায়ী এবং স্থায়ী পতিত জমিকে চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসলে সেসব জমি থেকে আরো ১০ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্য অতিরিক্ত উৎপাদন করা অসম্ভব কিছু নয়। এভাবে যদি আমরা ৩০ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্য অতিরিক্ত সঞ্চয় করতে পারি তাহলে কোন অবস্থাতেই দুর্ভিক্ষ কিংবা খাদ্য সংকট আমাদের দেশের মানুষকে গ্রাস করতে পারবে না। ক্ষুধা নামক দানব বাংলাদেশের কখনোই মানুষের মুখের আহার কেড়ে নিতে পারবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারাদেশব্যাপী আজ যে মহাউন্নয়ন সে উন্নয়নকে বাঁধাগ্রস্ত করতে বিভিন্ন দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক চক্রান্ত ষড়যন্ত্র চলছে। সেই আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেশে খাদ্য সংকটের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটি সুগভীর চক্রান্ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ চক্রান্তকে কোনভাবেই সফল হতে দেওয়া যাবে না। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহবানের পাশাপাশি বর্ণিত প্রস্তাবনাসমূহ গভীরভাবে বিবেচনা করে একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা নির্ধারণ করলে বাংলাদেশ সমূহ দুর্ভিক্ষ কিংবা খাদ্য সংকট থেকে মুক্ত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। খাদ্য সংকট মোকাবেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি সামাজিক আন্দোলনও গড়ে তোলার অনুরোধ সুজনের।
Chief Adviser : Prof. Partha Sarathi Chowdhury. Chairman : Manas Chakroborty. Head Office: 40 Momin Road, Chittagong. Editorial Office: Farid Bhaban (2nd floor), in front of Hajera Taju Degree College, Chandgaon, Chittagong. News Desk : Email : chattobanglanews@gmail.com, Hello : 019-2360 2360
Copyright © 2025 চট্টবাংলা. All rights reserved.