প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ৭, ২০২৫, ৫:৩১ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৮, ২০২০, ১২:৩২ অপরাহ্ণ

সবুজ অরণ্য। চট্টবাংলা প্রতিনিধি -ঃ
নারী সেতো আদ্যশক্তি। সৃষ্টি আর সৃজনশীলতার বাতিঘর। মনণে-সৃজনে-শিক্ষায় একজন নারী লালন করে তার সৃজনীশক্তিকে। আর নারীর সেই শক্তিকে যদি একটু অলংকরণ করে পরিবার,সমাজ সর্বোপরি রাষ্ট্র তখনই শাণিত হয় তার অন্তশক্তি। সৃষ্টি হয় নব-নব ধারনা। সমৃদ্ধির শিখড়ে পৌঁছে একটি পরিবার। উন্নত হয় সমাজিক অর্থনীতি।
বিশ্বের অর্ধেক জনসংখা যেখানে নারী, সেখানে নারীকে বাদ দিয়ে এই পৃথিবীর সামগ্রিক উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়। আমাদের দেশের ক্ষেত্রেও কথাটি পুরোপুরি সত্য। তবে অপ্রিয় সত্য হচ্ছে, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতিতে পুরুষের তুলনায় নারীর অংশগ্রহণ সবসময়েই কম। তবে আশার কথা এই যে, নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ এবং অবদান দিন দিন বাড়ছে।
আজ নারী শুধু হেঁসেলে বন্দী নয়। পা রাখছে ঘরের বাইরে। অংশ নিচ্ছে পুরুষের পাশাপাশি
নানা প্রতিযোগিতামূলক কাজে। শুধু চাকরিই নয়, নিজের ইচ্ছে শক্তিকে কাজে লাগিয়ে যুক্ত হচ্ছে স্বাধীন ব্যবসায়। উদ্যেক্তা হিসেবে অর্জন করে নিচ্ছে কাজের স্বীকৃতিও। নিজে আত্ন-নির্ভরশীল হওয়ার পাশাপাশি সৃষ্টি করছে কর্মসংস্থানের।
তেমনি একজন সেঁজুতি দাশ। শখ থেকেই যার শুরু হয় সৃষ্টির পাঠ। তিনি বলেন, আমার শুরুটা স্কুল জীবন থেকে। স্কুলের ক্লাস পার্টিতে আমাদের প্রতিযোগিতা ছিল নিজের হাতে কিছু বানানো।
আমি সেই প্রতিযোগিতায় নিজের হাতে বানানো একটা পাখি নিয়ে হাজির হই। কাপড় দিয়ে বানানো সেই পাখি দেখে সেদিন ম্যাডাম অনেক খুশি হয়ে আমাকে এ রকম আরো কয়েকটা পাখি বানিয়ে দিতে বলেন, জীবনের প্রথম অর্ডার। সেদিন পারিশ্রমিক হিসেবে পাই দুটো চকলেট আর ম্যাডামের প্রিয় ছাত্রীর সার্টিফিকেট।
দিনটি আরো স্মৃতিময় হয় "যেদিন পাখি বানানো দেখে বাবা বলেছিল খুব সুন্দর হয়েছে, জীবনে যদি পারিস তবে এমন কিছু করিস "। সেদিন বাবার উৎসাহ পেয়ে নিজেকে খুব গর্বিত মনে হয়েছে। তখনই নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিলাম
যেকরে হোক এ সৃজনশীলতাকে পুঁজি করেই আনব জীবনের স্বনির্ভরতা। মনে হয় উদ্যোক্তা জীবনের শুরু সেই দিন থেকেই।
একজন নারী শুধু চাকরির বাজারে নয়,বরং নিজে উদ্যোক্তা হয়ে অন্যের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের সমাজে সফল ব্যবসায়ীর তালিকায় নারীর সংখ্যা খুব একটা নেই বললেই চলে। এর পিছনে বিভিন্ন ধরনের মানষিক,পারিবারিক এবং সামাজিক কারন সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তারপরেও কিছু কিছু নারী পিছপা হয়ে থাকেনি। সকল বাঁধা পেরিয়ে নিজেদেরকে সাফল্যের শিখড়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। বর্তমানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা পূর্বের তুলনায় সহজ।
এখন অনলাইন ভিত্তিক বেশকিছু প্রতিষ্ঠান নিজেদের ব্যবসার ব্যাপকতা বাড়ালেও কিছু কিছু স্বপ্নবাজ মানুষের উদ্যোগে বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি, থ্রি পিচ, নানা উপাদানে তৈরি গয়না, সাংসারিক পণ্যের বিপণন এবং সীমিতসংখ্যক সেবা ও প্রযুক্তি ভিত্তিক উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো। এই মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের তুলনামূলক উপস্থিতিই বেশি লক্ষণীয়। একটু গভীরে গেলেই বোঝা যায় সামাজিক ও পারিবারিক দায়বদ্ধতা এবং প্রতিবন্ধকতা বিশেষ বাধা হয়ে দাঁড়ায় না বলে অনলাইন ফ্লাটর্ফমে নারীদের এই স্বচ্ছন্দ পদচারণা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, উদ্যোক্তা সেঁজুতি দাশ চট্টবাংলাকে বলেন, দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকার পর নানা হিসাব–নিকাশ মিলিয়ে ভালো লাগার জায়গাটিতেই মনোযোগী হয়েছি। নিজস্ব আগ্রহ ও অভিজ্ঞতাকে ব্যবহার করে একটু একটু করে গড়ে তুলেছেন ক্রেতাবলয়, অর্জন করেছেন গ্রহকদের আস্থা। শুরুটা স্বাভাবিকভাবেই মসৃণ না হলেও দুই বছরে তার প্রতিষ্ঠান "গহনায় বাঙ্গালিয়ানা " www.facebook/bdGoinaybangaliana পেড়িয়েছে অনেক বঙ্গুর পথ।
সেঁজুতি মনে করেন, অনলাইনভিত্তিক উদ্যোগগুলোকে এখনো অনেকেই সংসার সামলে অবসরে করা শখের কাজ ভাবে। শুরুতে তার এমনও অভিজ্ঞতা হয়েছে, অনেকে তার ব্যবসাটি ঘরকেন্দ্রিক ভেবে তেমন খরচের ব্যাপার নেই বলে ন্যায্য স্বীকৃতিটিও দেয়নি। কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেন, যেকোনো সনাতনী পেশাজীবীর চেয়ে একজন উদ্যোক্তাকে তার ব্যবসায় ভাবনা, শ্রম ও সময় কোনো অংশেই কম দিতে হয় না। তবে, অনলাইন ব্যবসার সুবিধাজনক দিক হলো ক্রেতার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ যা ব্যবহার করে তাঁদের আস্থার জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব। আর তাদের নমনীয়তাও প্রশংসা সূচক বলেই উদ্যোগ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়।
পরিশেষে কবির ভাষায় বলতেই হয় " বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি, যা চীর কল্যাণ কর /অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর"। এগিয়ে যাক স্বপ্নের বীজতলা। এগিয়ে যাক সৃজনশীল তারুণ্য। রচিত হোক নারী পুরুষে বৈশম্যহীন একটি সমাজ।
Chief Adviser : Prof. Partha Sarathi Chowdhury. Chairman : Manas Chakroborty. Head Office: 40 Momin Road, Chittagong. Editorial Office: Farid Bhaban (2nd floor), in front of Hajera Taju Degree College, Chandgaon, Chittagong. News Desk : Email : chattobanglanews@gmail.com, Hello : 019-2360 2360
Copyright © 2025 চট্টবাংলা. All rights reserved.